Saturday, September 30, 2017

লিনাক্স নিয়ে প্রচলিত ধারণা এবং বাস্তবতা

আগে শুনতাম লিনাক্স কঠিন, কমান্ড দিয়ে দিয়ে কাজ করতে হয়, খুব বেশি দিন আগের কথা না, ২০১৬ সালের কথা এটা। তাও এ কথাটা কোন সাধারণ লোকের মুখ থেকে শুনলে এক কথা হত, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত লোকটি ছিল একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনীয়ার! এরপর বহু দিন কেটে গেছে, ধীরে ধীরে অনেক কিছুই জানার সুযোগ হল, আর প্রতিনিয়ত জেনেই যাচ্ছি আর চেষ্টা করছি আমি যতটুকু জানি তা যেন নতুন ব্যবহারকারীদের জানাতে পারি যেন আমার মত তাদের কোন কম্পিউটার ইঞ্জিনীয়ারদের কাছ থেকে শুনতে না হয়, "লিনাক্স কঠিন, কমান্ড দিয়ে কাজ করতে হয়, অনেক কমান্ড জানতে হয়...."।

একটু ভুল শুধরে নিই, আসলে যে অপারেটিং সিস্টেমকে গণহারে  লিনাক্স বলা হয় বা লিনাক্স নামে পরিচিতি পেয়েছে, এটা আসলে গনু+লিনাক্স বা গনু/লিনাক্স (দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমি যখন শুরুর দিকে উবুন্টু ব্যবহার করতাম তখনো জানতাম না এর নাম গনু/লিনাক্স(GNU/Linux) আর রিচার্ড স্টলম্যান(Richard Stallman) এর নাম জেনেছি আরো অনেক পরে! লিনাস তরভার্লস (Linus Torvalds) এর নাম অবশ্য জানতাম! গনু/লিনাক্স ব্যবহার শুরু করার আগে এই দু'জন মানুষ সম্পর্কে জেনে নেবার অনুরোধ রইলো) 

লিনাক্স হল কার্নেল, যা কম্পিউটারের হার্ডয়্যারের সাথে এর সফ্ট্যয়ারের যোগাযোগ করিয়ে দেয়।
আর গনু হল ইউনিক্স সদৃশ অপারেটিং সিস্টেমের গঠন (Unix like Operating System's Interface), (ইউনিক্স হল প্রথম অপারেটিং সিস্টেম। )

এখন গনু (অপারেটিং সিস্টেমের গঠন) লিনাক্স কার্নেল ব্যবহার করে, তাই দু'টি মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ অপারেটিং সিস্টেম।
আশাকরি কিছুটা বোঝাতে পেরেছি। শুরুর দিকে এসব খুব আজব লাগতো, কিচ্ছু বোঝতাম না।
তবে এসব না বুঝলেও গনু/লিনাক্স চালাতে কোন বাধা নেই।

[লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম না হলেও বর্তমানে "গনু/লিনাক্স" ই লিনাক্স নামেই এতটা পরিচিতি পেয়েছে যে প্রায় ৯০% ওয়েব সাইটে "লিনাক্স" নামেই গনু/লিনাক্সের কথা বলা হয়েছে, তাই আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য গনু/লিনাক্সের পরিবর্তে আমিও শুধু "লিনাক্স" ব্যবহার করবো ]
সাধারণত, "কেন লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করব?" এর জন্য ৬টি কারণকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

১।  সম্পূর্ণ ফ্রী : লিনাক্স সম্পূর্ণ ফ্রী, কোন টাকা খরচ করতে হবে না এটা ব্যবহার করতে। আর স্বাধীন ভাবে চালাতে পারবেন। এমনকি চাইলে আপনি এটা নিজের মত করে পরিবর্তনও করে নিতে পারবেন, এবং বিতরণও করতে পারবেন।

২। নিরাপত্তা : যখন অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীরা তাঁদের কম্পিউটার ভাইরাস নিয়ে চিন্তিত, আর বছর বছর অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানিগুলিকে টাকা দিয়ে যাচ্ছে, তখন লিনাক্স ব্যবহারকারীরা নিশ্চিন্তেই থাকেন।

৩। পুরাতন কম্পিউটারেও স্বচ্ছন্দে চালাতে পারবেন।

৪। অ্যাপ্লিকেশন : লিনাক্সের সফ্টয়্যার সেন্টারে আপনার প্রয়োজনীয় সকল অ্যাপ্লিকেশনই পাবেন। হাজার হাজার সফ্টয়্যারে পরিপূর্ণ।

৫। মনের মত পরিবর্তন : আপনার মন যেমনটি চায় ঠিক তেমন করেই সাজিয়ে নিতে পারবেন আপনার প্রিয় যন্ত্রটিকে। লিনাক্স আপনাকে সে সুযোগ দেয়।

৬। কমিউনিটি (সংঘ) : লিনাক্স কমিউনিটি নির্ভর, যে কোন সমস্যা আপনার কমিউনিটিতে জানালে সেখান থেকেই সমাধান পেয়ে যাবেন।

আরো কিছু সুবিধা আমার অভিজ্ঞতার আলোকে যোগ করতে পারি।
৭। ড্রাইভার : অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটলেশনের সময় আপনার যে সকল ড্রাইভার প্রয়োজন, তা সে নিজে নিজেই ইন্সটল করে নেবে।

৮। আপ-টু-ডেট(নতুনত্বে পরিপূর্ণ) : সব সময়ই আপনি আপ-টু-ডেট থাকতে পারবেন।

৯। নিয়ন্ত্রন : আপনার কম্পিউটার আপনার নিয়ন্ত্রণেই থাকবে, আপনিই এখানে প্রধান।

১০। নৈতিকতা : আপনি নীতিবান মানুষ হলে নিশ্চই পাইরেসি আপনার পছন্দের নয়, আর এখানে আপনার পাইরেসি করতে হবে না, সব কিছু ফ্রী, আপনার জন্য।

আরো অনেক কিছুই, রয়েছে যা আপনাকে দুঃচিন্তা মুক্ত রাখতে পারে। যেমন, কম্পিউটার হ্যাং হওয়া, শর্টকাট সমস্যা, ড্রাইভার সমস্যা, আপডেট দিতে না পারা, সফ্টয়্যার ক্র্যাক করে চালাতে গিয়ে কম্পিউটার হ্যাক হওয়া.........ইত্যাদি।

তবে লিনাক্স চালাতে হলে আপনাকে একটু স্মার্ট (চৌকশ) হতেই হবে, অথবা চালাতে চালাতে হয়ে যাবেন। ☺

আরো দেখুন,

কেন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ফ্রী-সফ্টয়্যার ব্যবহার করা উচিৎ ?--(রিচার্ড স্টলম্যান)

Wednesday, September 6, 2017

গনু/লিনাক্সে বাংলা ফন্ট সমস্যা এবং সমাধান


গনু/লিনাক্সের বিভিন্ন ডিস্ট্রোতে একটি সাধারণ সমস্যা প্রায়ই নতুন ব্যবহারকারীদের কিছুটা বিব্রত করে। এটা হল বাংলা ফন্ট সমস্যা । আশা করি লেখাটি পড়ার পর নতুন ব্যবহারকারীদের আর এই সমস্যা থাকবে না।
মাত্র ১০-১২ সেকেন্ডের সমস্যা, আসুন ৫ ধাপে সমাধান করি।

১। বাংলা ফন্ট প্যাকেজ ডাউনলোড করুন। Bangla-fonts.tar.xz (1.5 MiB) এবং Extract করুন।
"Bangla-fonts" নামের 7.3 MiB এর একটি ডাইরেক্টরি পাবেন।

২। হোম (Home) ডাইরেক্টরিতে যান আর  Ctrl+H (কন্ট্রোল এবং এইচ একসাথে) প্রেস করুন।

৩। সেখানে .fonts (ডট ফন্টস্) নাম দিয়ে একটি ডাইরেক্টরি তৈরী করুন।

৪। এখন Extract করে পাওয়া "Bangla-fonts" নামের ডাইরেক্টরিটি .fonts (ডট ফন্টস্) এর ভেতর এনে রাখুন।

৫। sudo fc-cache -fv



[ যখন কোন ফন্টের প্রয়োজন হবে তখন ওই ফন্টটি ডাউনলোড করে .fonts ডাইরেক্টরির ভেতরে রাখবেন, সমস্যা সমাধান! ]


আরো দেখুন,

Tuesday, September 5, 2017

কোন ডিস্ট্রো দিয়ে শুরু করবো আর কোন Environment?

গনু/লিনাক্স(GNU/Linux) যে নিরাপদ এবং যথেষ্ট ভাল অপারেটিং সিস্টেম তা মোটামুটি প্রযুক্তি জ্ঞান সম্বলিত সকলেরই জানা। কিন্তু গনু/লিনাক্স(GNU/Linux) এর ডিস্ট্রো(Distro)র তো অভাব নেই। হাজার হাজার ডিস্ট্রো, তাই নতুন ব্যবহারকারীরা প্রথম দিকে বেশ দ্বিধায় পড়ে যায় যে কোনটা দিয়ে শুরু করবো অথবা কোনটি সেরা?
আজ এ বিষয় নিয়ে কিছুটা কথা বলবো, আশাকরি তা আপনার দ্বিধা দূর করতে সাহায্য করবে।

× কোনটি (কোন ডিস্ট্রো) দিয়ে শুরু করা উচিৎ?
উত্তর: চোখ বন্ধ করে আপনার লিনাক্স মিন্ট অথবা উবুন্টু দিয়ে যাত্রা শুরু করা উচিৎ। বিভিন্ন ওয়েব সাইটেও এই সাজেশন ই পাবেন। এর কারণ হিসেবে হয়তো ভাবতে পারেন অন্য ডিস্ট্রোগুলি কঠিন! আসলে ব্যপারটি ওরকম নয়। লিনাক্স মিন্ট এবং উবুন্টুর সফটওয়্যার ম্যানেজারটি আসলে চমৎকার ভাবে সাজানো, তাই নতুন ব্যবহারকারীদের সফ্টওয়্যার ইনস্টলেশন এ কোনরূপ ঝামেলা পোহাতে হয়না বা টার্মিনালে কোন কমান্ড লিখতে হয় না।
অনেকটা স্মার্টফোনের মতই সহজ ব্যাপার।

আবার গনু/লিনাক্সের অনেকগুলি Environment রয়েছে, যেমন: GNOME, Mate, Cinnamon, Unity, Lxde, Xfce, KDE.......আরো শ খানেক বা তারও বেশি । স্বাভাবিক ভাবে এখানেও নতুন ব্যবহারকারি বেশ দ্বিধায় ভোগে। এর কিছুটা সহজ সমাধান বাতলে দিচ্ছি,

১. যদি আপনার র্যাম ২জিবি হয়, তাহলে ৩২ বিট(x86) ব্যবহার করবেন। (বাকি সব নিচের মতই)
২. ৪ জিবি র্যাম + ডুয়াল কোর = Lxde অথবা Xfce ব্যবহার করা ভাল, Cinnamon ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩. ৪ জিবি র্যাম + কোর আই-৩ = Mate, Cinnamon, Unity, Xfce, GNOME ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. ৪ জিবি র্যাম + কোর আই-৫ = GNOME, KDE, Unity, Mate, Cinnamon, Xfce (সব)



কাজের ক্ষেত্রে সবগুলি একই, শুধু ফ্লেভারে একেক রকম আমেজ(Environment) পাবেন। আর সিক্যুরিটি অ্যাডমিন বা হ্যাকারদের জন্য বিশেষ(Special) ডিস্ট্রিবিউশনগুলি হচ্ছে কালি লিনাক্স(Kali Linux), প্যারট সিক্যুরিটি ওএস(Parrot Security OS), ব্ল্যাক আর্চ লিনাক্স(Black Arch Linux), ব্যাকবক্স(BackBox) ইত্যাদি। এদের কাজ কিছুটা আলাদা।

এই বিশেষ কিছু ডিস্ট্রো ছাড়া সব ডিস্ট্রো দিয়েই একই রকম কাজ করা যায়, শুধু স্টাইলে কিছুটা ভিন্নতা থাকে। তাই এখানে যেসব কথা বলা হচ্ছে তা সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

Environment অনুযায়ী ডিস্ট্রোর লিঙ্ক (এখানে শুধু উবুন্টু আর লিনাক্স মিন্টের লিঙ্ক দেওয়া হচ্ছে), এগুলি মাস তিনেক চালালে আপনি নিজেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবেন।

× Lxde - লুবুন্টু (Lubuntu)

× Xfce
১. লিনাক্স মিন্ট এক্সএফসিই (Linux Mint Xfce)
২. যুবুন্টু(Xubuntu)

× Cinnamon - লিনাক্স মিন্ট সিনামন (Linux Mint)

× Mate
১. উবুন্টু মেট(Ubuntu Mate)
২. লিনাক্স মিন্ট মেট(Linux Mint Mate)

× Unity - উবুন্টু ই্উনিটি (Ubuntu Unity)

× GNOME - উবুন্টু (Ubuntu)

× KDE

১. লিনাক্স মিন্ট কেডিই(Linux Mint KDE)
২. কুবুন্টু (Kubuntu)
সোর্স: আমার অনিয়মিত লেখার ব্লগ (কোন ডিস্ট্রো দিয়ে শুরু করবো আর কোন Environment?)

Simple Screen Recorder এবং ফেসবুকে স্ক্রিন শেয়ারিং এর Black Screen সমস্যার সমাধান

 লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেমে GNOME Interface ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ ফেসবুকের ভিডিও কলে স্ক্রিন শেয়ারিং অপশনে কিংবা সিম্পল স্ক্রিন রেকর্...