Sunday, May 14, 2017

গনু/লিনাক্স (যে কারনে ব্যবহার করা উচিৎ)


কেউ লিনাক্স চালায় (আসলে গনু/লিনাক্স) এমনটা শুনলেই অনেকে ভেবে নেন যে সে একজন হ্যাকার, আর খুব ভাল প্রোগ্রামার। এ কথা সত্য হলেও হতে পারে, তবে গনু/লিনাক্স চালাতে প্রোগ্রামিং জানতে হয়, এটা সত্য নয়, কিন্তু প্রোগ্রামারদের জন্য গনু লিনাক্স এক বিশেষ উপহার।
অধিকাংশ লোকের (আমার অল্প অভিজ্ঞতার আলোকে) মধ্যে যে ভুল ধারণা,তা হল "লিনাক্স মানেই কমান্ড দিয়ে কাজ করতে হয়! আর কমান্ড জিনিসটা অনেক কঠিন!!”, আমি এর সাথেও একমত হতে পারলাম না। কেননা, প্রথমত, লিনাক্স মানেই কমান্ড দিয়ে কাজ করা নয়। উইন্ডোজে যে রকম, লিনাক্সেও ঠিক তেমনই। তবে "কমান্ড লাইন”, লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেমের একটি বিশেষ "ফিচার”, যে কাজ করতে আপনাকে কয়েকটা সফ্টয়্যার ব্যবহার করতে হচ্ছে , সেই কাজ করতে হয়তো এক লাইনের একটি "কমান্ড” হলেই হয়!


লিনাক্স আসলে কোন অপারেটিং সিস্টেম নয়, অপারেটিং সিস্টেমের কার্নেল। যে সব অপারেটিং সিস্টেমকে আমরা ঢালাও ভাবে লিনাক্স বলি সেগুলি আসলে গনু অপারেটিং সিস্টেমের ডিস্টো। এজন্য এদের গনু/লিনাক্স বলাই সঠিক। মহান দার্শনিক রিচার্ড স্টলম্যানের চিন্তা থেকেই এই অপারেটিং সিস্টেমের উদ্ভব, এর সাথে জড়িয়ে আছে সেরা সেরা প্রোগ্রামারদের নিরলস শ্রম।


গনু/লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের উদ্দেশ্য হল ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট দুনিয়ায় নিরাপত্তা এবং তাদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। যেমন ধরুন ইচ্ছে করলেই আপনি উইন্ডোজের কোন সফ্টয়্যারের কোনরূপ পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারবেন না, এসব তো দূরের কথা আপনি উইন্ডোজ সফ্টয়্যারের সোর্স কোড পর্যন্ত দেখতে পারবেন না। আপনি শুধু তা ব্যবহার করতে পারবেন, অন্ধের মত প্রস্তুুতকারকদের বিশ্বাস করে। ওই প্রোগ্রামটি আসলে কি করছে তাও আপনি জানতে পরছেন না, ধরুন আপনি কোন প্রোগ্রাম ডাউনলোড করলেন যেটা আপনার কম্পিউটারকে নিরাপত্তা দেবে, কার্যত ওটা আপনার অজান্তে আপনি যা টাইপ করছেন বা কোন সাইটে লগইন করছেন তা তার প্রস্তুতকারকের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এমনটা হতেই পারে কেননা প্রোগ্রামটিতে কি নির্দেশনা দেওয়া আছে তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন না। এজন্যই প্রায়ই উইন্ডোজে "ভাইরাসের আক্রমণ” কথাটি শোনা যায়।
 
আর গনু/লিনাক্সের মূলনীতি হল "সার্বজনীন উন্মুক্ত সোর্সকোড”, আপনি ইচ্ছে করলে তা পরিবর্তনও করতে পারবেন। এজন্যেই কেউ পরিশ্রম করে লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ভাইরাস প্রোগ্রাম লেখার চেষ্টা করেনা।


রমরমা ভাইরাস-অ্যান্টিভাইরাসের খেলা হল দুই দল দক্ষ প্রোগ্রামারদের। কিন্তু এতে কাদের ক্ষতি হয়??
গনু/লিনাক্সে আপনি এই সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্ত।
গনু/লিনাক্সের অসংখ্য ডিস্টো রয়েছে, দেবীয়ান, কালী লিনাক্স, উবুন্টু, লিনাক্স মিন্ট, উপেন স্যুস, ফেদোরা, আর্চ লিনাক্স, মানজারো লিনাক্স ইত্যাদি। আপনি ইচ্ছে করলে নিজের জন্য বানাতে এবং বিতরণ করতেও পারবেন। উইন্ডোজে যা আপনার কল্পনারও অতীত!



একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতেই ভুলে গেছি! গনু/লিনাক্স সম্পূর্ণ "বিনামূল্যে” পাবেন, আপনার টাকা থাকলে কিছু অনুদান দিতে পারেন, কিন্তু টাকা দিয়ে কিনে ব্যবহার করতে হবে না।
লিনাক্সের টাকা দিয়ে কিনতে হয় এমন ডিস্ট্রোও রয়েছে যেমন "রেড হ্যাট লিনাক্স”। 




আরো দেখুন,

কেন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ফ্রী-সফ্টয়্যার ব্যবহার করা উচিৎ ?--(রিচার্ড স্টলম্যান)

Thursday, May 11, 2017

লিনাক্স মিন্টে সফ্টয়্যার ইন্সটলেশন এবং কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপস্

লিনাক্স মিন্টে সফ্টয়্যার ইন্সটলেশন নিয়ে আজ কিছু আলোচনা করার চেষ্টা করবো, একদম প্রাথমিক আলোচনা, আমার বিশ্বাস প্রাথমিক বিষয়গুলি আয়ত্ব হওয়ার পর আপনি নিজেই উচ্চতর বিষয়গুলি বুঝতে পারবেন।
উইন্ডোজে যেমন .exe ফাইলকে আমরা অ্যাপ্লিকেশন ফাইল হিসেবে বিবেচনা করি আবার স্মার্ট ফোনের ক্ষেত্রে .apk তেমনি লিনাক্স মিন্টের জন্য কি?

=> লিনাক্স মিন্ট/উবুন্টু/দেবীয়ানে আপনি .deb ফাইল অনেকটা উইন্ডোজের মত করে ইন্সটল করতে পারবেন ।
তবে লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেম গুলিতে সফ্টয়্যার ইন্সটলেশন আরো সহজই বলা যেতে পারে। অনেকটা আপনার স্মার্ট ফোনের "প্লে স্টোর" এর মত এখানেও পেয়ে যাবেন “Software Manager” , আপনার যা যা দরকার, সব আছে এখানে। "সার্চ বক্স" এ সার্চ দিয়েও খুঁজে নিতে পারেন আপনার প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন টি।

আপনার সুবিধার জন্য কিছু দরকারী apps এর নাম দিয়ে দিচ্ছি, প্রয়োজনীয়তা অনুসারে ইন্সটল করে নিয়েন।
১। প্রোগ্রামিং এর জন্যঃ লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেম গুলোতে যে কোন টেক্সট রিডার দিয়েই প্রগ্রামিং এর কাজ অনায়াসেই করে ফেলতে পারবেন । উবুন্টুতে Gedit আর লিনাক্স মিন্টে Xed টেক্সট রিডার যুক্ত থাকে, অনেক প্রোগ্রামারেরই প্রিয়। এরপরেও আপনি CodeBlocks, Geany, Eclipse এগুলি ইন্সটল করে নিতে পারেন।

২। গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্যঃ ফটোএডিটিং এর জন্য লিনাক্স মিন্টে "গিম্প(Gimp)" দেওয়াই থাকে।
Blender: অ্যানিমেশন তৈরীর জন্য। ইউটিউবে এর অনেক টিউটোরিয়াল আছে।
Inkspace:  ইলাস্ট্রেশন এর কাজে বহুল ব্যবহৃত।
Pinta: ছবি আঁকার জন্য ব্যবহৃত।

৩। পার্টিশন করার জন্যঃ Gparted

৪। বই(E-book) পড়ার জন্যঃ Calibre

৫। সিস্টেম পরিষ্কার রাখার জন্যঃ Ubuntu Tweak

৬। টরেন্ট ডাউনলোডের জন্যঃTransmission” দেওয়াই থাকে আপনি চাইলে “Deluge” or “Qbittorrent” ইন্সটল করে নিতে পারেন।

৭। গ্রাব(Grub Menu) মেন্যু ঠিক করার জন্যঃ Grub Customizer

৮। ওয়েব ক্যামেরাঃ Cheese

৯। ভিডিও প্লেয়ারঃ VLC Player আর Media Player দেওয়াই থাকে। আমার কাছে  mpv প্লেয়ার ভাল লাগে। Mplayer বা SMPlayer ও ব্যবহার করতে পারেন।

১০। মহাকাশ পর্যপেক্ষনের জন্যঃ Stellarium খুবই ভাল । যদি আপনি মহাবিশ্ব সম্বন্ধে আগ্রহী হোন।


আশা করি লেখাটি আপনার কাজে লাগবে, যদি আপনি এখান থেকে সামান্য উপকৃত হয়ে থাকেন সেটিই আমার সার্থকতা, আপনার প্রতি অনুরোধ হল, গনু/লিনাক্স ব্যবহারে আপনার বন্ধুদের উৎসাহিত করুন।


আরো দেখুন,

কেন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ফ্রী-সফ্টয়্যার ব্যবহার করা উচিৎ ?--(রিচার্ড স্টলম্যান)

Simple Screen Recorder এবং ফেসবুকে স্ক্রিন শেয়ারিং এর Black Screen সমস্যার সমাধান

 লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেমে GNOME Interface ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ ফেসবুকের ভিডিও কলে স্ক্রিন শেয়ারিং অপশনে কিংবা সিম্পল স্ক্রিন রেকর্...